বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

Monday, December 16, 2013

২০১৩ সালের সেরা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস


১. ক্লাউড স্টোরেজ
কাজ করতে গিয়ে আপনাকে আর কোনো নির্দিষ্ট ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে আবদ্ধ থাকতে হচ্ছে না। ফাইল সংরক্ষণে পাওয়া যাচ্ছে ফ্রি স্টোরেজ সুবিধা। যেকোনো ডিভাইসের মাধ্যমে ওয়েবে যুক্ত থেকে এই ফ্রি স্টোরেজ ব্যবহার করা যায়। অনেক রকমের ফ্রি স্টোরেজ থাকলেও পছন্দের শীর্ষে রয়েছে 'ড্রপবক্স ফর অ্যান্ড্রয়েড' ও 'গুগল ড্রাইভ'।

ড্রপবক্স হচ্ছে অনলাইন স্টোরেজ সেবা। এর মাধ্যমে যেকোনো অবস্থানে থেকে আপনি ফাইল নিয়ে কাজ করতে পারবেন। পিসি, ট্যাবলেট বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে সমান তালে কাজ করা যায় এই সেবার মাধ্যমে। ধরা যাক, আপনি ঘরে বসে পিসিতে একটি ফাইল নিয়ে কাজ করছিলেন। কাজ শেষ না করেই আপনাকে কোথাও যেতে হচ্ছে। এবার গাড়ির আসনে বসে ল্যাপটপে সেই ফাইলটিতে কাজ করতে থাকুন। বন্ধুকে নিয়ে ক্যাফেতে আড্ডা দিচ্ছেন। কিছু তথ্য পরিবর্তনের জন্য বস তাগাদা দিলেন। চালু করুন স্মার্টফোন। সেই একই ফাইলে বসের হুকুম তামিল করতে পারবেন।

ড্রপবক্সের মতই গুগলের এমন ক্লাউড সেবা হচ্ছে গুগল ড্রাইভ। মূলত ইমেইলের অ্যাটাচমেন্ট ফাইল নিয়ে কাজ করার জন্য এর ব্যাপক ব্যাপহার থাকলেও যেকোনো ফাইল নিয়ে কাজ করা যায় গুগল ড্রাইভে।

১. ইমেইল ব্যবস্থাপনা
অবধারিতভাবেই শীর্ষে থাকছে জিমেইল। এর সুবিধা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। আরো একটি শক্তিশালী ইমেইল ব্যবস্থাপনার নাম অ্যাকুয়া মেইল। কোনো কারণে যদি জিমেইলের প্রতি নাখোশ হন আপনি, ব্যবহার করতে পারেন এই অ্যাকুয়া মেইল। এতে স্ট্যান্ডার্ড প্রটোকলের সুবিধা যেমন, আইম্যাপ, পপথ্রি, এসএমটিপি ছাড়াও রয়েছে 'টাসকার'-এর মত কিছু অ্যাপস ব্যবহারের সুযোগ। এছাড়া থার্ড-পার্টি অ্যাপস 'নোভা লঞ্চার', 'এপেক্স', 'ক্লাউড প্রিন্ট', প্রভৃতি ব্যবহারের সুবিধা।

আরো একটি উল্লেখযোগ্য ইমেইল ব্যবস্থাপনার নাম কে-৯ মেইল। কমিউনিটি-ভিত্তিক ও ওপেনসোর্স ব্যবস্থার ইমেইল এটি। এতে নানারকম বাহারি আয়োজন নেই, তবে যা আছে তা সেরা মানের। বিশেষ করে কম রিসোর্স ব্যবহার করা এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

৩. গান
অ্যান্ড্রয়েডের মাধ্যমে ডিজিটাল মিউজিকের অবারিত সুযোগ সম্পর্কে নতুন বলার কিছু নেই। এর ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যারের অভাব নেই। তবে শীর্ষ দুই অ্যাপসের নাম 'গুগল প্লে মিউজিক' ও 'স্পটিফাই'। গুগল প্লে মিউজিক শুরু থেকেই আবশ্যিক অ্যাপস হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল সংগীত অনুসন্ধানে বিশেষায়িত সেবা দিয়ে আসছে। প্লে স্টোর থেকে কেনার পর আপনার সংগীতের সংগ্রহ ক্লাউডে রেখে নানাভাবে ব্যবহার করতে পারেন। প্লে মিউজিকের স্মার্ট প্লে-লিস্ট আপনার ভালো লাগবে।

মিউজিকের জন্য আরেকটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা 'স্পটিফাই'। এর প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশানের মাধ্যমে পুরো লাইব্রেরি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ফ্রি ব্যবহারকারীদের জন্য মোবাইলে রেডিও সার্ভিস ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। স্পটিফাইয়ে আরো আছে ইন্টারনেট রেডিও ট্র্যাকের ব্যবস্থা যা শিল্পী ও গানের ধরন অনুসরণ করতে পারে। এছাড়া নিজের অ্যাকাউন্টে প্লে-লিস্ট পছন্দ অনুযায়ী গুছিয়ে নিতে পারবেন।

৪. ফটোগ্রাফি
ছবি তুলুন, সম্পদনা করুন, শেয়ার করুন। এজন্য স্মার্টফোনের ক্যামেরায় সুবিধার ছড়াছড়ি। অ্যান্ড্রয়েডসমৃদ্ধ ডিভাইসে নিজস্ব ব্যবস্থা রয়েছে, যা ছবি ব্যবস্থাপনা ও ট্রান্সফারের কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসের মাধ্যমে দ্রুত ব্যপক সম্পাদনার সুযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে আপনার আলোকচিত্র চর্চা আরো ব্যাপক করতে পারেন। এজন্য উল্লেখযোগ্য অ্যাপস হচ্ছে ইন্সটাগ্রাম, স্ন্যাপস্পিড ও এভিয়্যারি ফটো এডিটর।

এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলা যেতে পারে ইন্সটাগ্রামকে। মোবাইল ডিভাইসে এর ব্যবহার ব্যাপক। এর মাধ্যমে আপনি ছবি সম্পাদনায় আগে থেকেই কিছু পছন্দ সেট করে নিতে পারেন। ইন্সটাগ্রাম গড়ে তুলেছে সবচেয়ে বড় মোবাইল ফটো কমিউনিটি। টুইটার, ফেসবুক, টাম্বলারের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কে তাৎক্ষণিক সিনক্রোনাইজের সুযোগ রয়েছে ইন্সটাগ্রামে।

যারা কিছুটা উচ্চতর ছবি সম্পদনায় আগ্রহী, তাদের উপযুক্ত হচ্ছে স্ন্যাপস্পিড। এতে ওয়ান-টাচ ফিল্টারতো আছেই, ছবি শার্পেন করা বা কালার এডিট করার ব্যবস্থা এর বিশেষ আকর্ষণ। ফোকাসিং এফেক্ট এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

'এভিয়্যারি ফটো এডিটর' হচ্ছে আরো একটি জনপ্রিয় ছবি সম্পাদনার অ্যাপ। এতে নানারকম ওয়ান-টাচ ব্যবস্থা রয়েছে। যার মাধ্যমে এনহ্যান্সমেন্ট ও ফিল্টারের সুবিধা রয়েছে। এসব টুল ব্যবহার করে স্যাচুরেশান, ব্রাইটনেস, কালার টেম্পারেচার, শার্পেনিং প্রভৃতি কাজ সম্পাদন করা যায়। এভিয়ারির রয়েছে নিজস্ব ফিল্টার ও এফেক্ট অ্যাপস যা কিনে ব্যবহার করতে হয়।          
৫. নোটস
মোবাইল ফোনে চিরকুট অর্থাৎ নোটস সংরক্ষণ করা বর্তমানের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ক্লাউড প্রযু্ক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার এসব নোটস ব্যবস্থাপনা। নোটস হিসেবে জনপ্রিয় 'এভারনোট', গুগল কিপ ও স্প্রিংপ্যাড।

এভারনোট এমন এক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে যেকোনো ধরনের নোট ক্লাউড ব্যবস্থায় যেকোনো ডিভাইসে ইচ্ছেমতো কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোট সংরক্ষিত থেকে অন্যান্য অ্যাপসের সঙ্গেও তা সমন্বয় করে কাজ করতে সক্ষম। প্রোডাক্টিভিটি গুরুদের জন্য অপরিহার্য এই এভারনোট।

'গুগল কিপ' অন্যদের তুলনায় পরে এসেও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে ক্রমাগত জনপ্রিয় হচ্ছে। এর বিশেষ আকর্ষণ কুইক নোট-টেকিং ও স্ন্যাপশটের রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যবস্থা। গুগলের নিজস্ব ব্যবস্থা হওয়ায় সহজে এটি আয়ত্ব হয়। গুগলের অন্যান্য ব্যবস্থার সঙ্গে আপনি ব্যাপক জড়িত থাকলে নোটসের ক্ষেত্রেও আপনি এর উপর নির্ভর করতে পারেন।

'স্প্রিংপ্যাড নোট' ব্যবস্থাপনার আরেক জনপ্রিয় অ্যাপ। দক্ষতার দিক থেকে এটি কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নোটস ক্রমাগত ভারি হতে থাকলে কোনো ঝামেলা ছাড়াই এই অ্যাপ তা সামাল দিতে থাকে।

৬. কন্টাক্ট ম্যানেজার

আপনি হয়তো ব্যাপক ভ্রমণ করেন এবং প্রচুর লোকের সঙ্গে পরিচিত হতে হয়। তাই তাদের ফোন নম্বর ও নাম-ধাম সংরক্ষণে রাখা আপনার প্রাত্যহিক কাজ। এত তথ্য আপনার সাধারণ ফোনবুকে সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। যাদের নিত্য-নতুন বন্ধু জোটে তাদের তথ্য হারানো সুযোগ নেই। এসব ক্ষেত্রে কন্টাক্ট ম্যানেজার অ্যাপস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য জনপ্রিয়তম হচ্ছে, 'কন্টাক্ট প্লাস' ও 'টাচপ্যাল কন্টাক্টস'।

৭. চ্যাট
অ্যান্ড্রয়েড-এর রয়েছে বিভিন্ন রকম চ্যাট ও মেসেজিং ব্যবস্থা। এর সবগুলোরই রয়েছে নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা। তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষতালিকায় থাকছে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার, হ্যাংআউটস ও স্ন্যাপশট।

একসময় ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার শুধু নিজের নেটওয়ার্কে সেবা দিয়ে এসেছে। অর্থাৎ ফেসবুকে যুক্ত থাকা অবস্থায় চ্যাট করার ব্যবস্থা ছিল। বর্তমানে এর আওতা মোবাইল ফোনের এসএমএস তালিকা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ফেসবুকের চ্যাটিং টেক্সট বন্ধুর মোবাইলেও পৌঁছে যায়। এছাড়া পুরো কথোপোকথন সংরক্ষিত থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এই ব্যবস্থায়।

'হ্যাংআউটস' গুগলের নিজস্ব ব্যবস্থা। 'গুগল টক', 'ভিডিও চ্যাট', ছবি বিনিময়- ইত্যাদি সবই অন্তর্ভূক্ত রয়েছে 'হ্যাংআউটস'-এ। এর মাধ্যমে ১০ জন পর্যন্ত ভিডিও কন্সফারেন্স করা যায়। এছাড়া আপনি জানতে পারবেন কখন আপনার ম্যাসেজটি পড়া হয়েছে।

'স্ন্যাপশট' টাইমারভিত্তিক ম্যাসেঞ্জার ব্যবস্থা। অর্থাৎ কতক্ষণ চ্যাট করবেন তা আগেই নির্ধারণ করে দিতে পারেন। শেষের দিকে আপনাকে কাউন্টডাউন দেখাবে, ১০-৯-৮-৭-৬....। ছবি পাঠানোর ক্ষেত্রেও টাইমার ব্যবহার করা যায়।          

৭. ব্রাউজার
অ্যান্ড্রয়েড এমন এক প্লাটফর্ম যেখানে ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার উন্মুক্ত সুযোগ রয়েছে। মূলত ওপেন-সোর্স ব্যবস্থার জন্য এই খাত সুবিধা পাচ্ছে। আপনি যে ব্রাউজারই ব্যবহার করুন, অ্যান্ড্রয়েডের কারণে বাড়তি ফিচার কাজে লাগানোর সুযোগ আপনার জন্য অবারিত। বিশেষ করে অ্যাড-অনস বেছে নিয়ে আপনি নিজের মতো সাজিয়ে নিতে পারেন ব্রাউজার।

সবার আগে চলে আসে 'ক্রোম ফর অ্যান্ড্রয়েড'। ডেস্কটপে ক্রোম যে সুনাম অর্জন করেছে, অ্যান্ড্রয়েডের মাধ্যমেও সেই সুনাম অক্ষুণ্ণ রয়েছে। গুগলে সাইন-ইন করার মাধ্যমে সবগুলো সুবিধার আওতায় আপনি থাকতে পারছেন। বুকমার্ক বা নিজস্ব সেটিংসের সব সুবিধা পাওয়া যায় অ্যান্ড্রয়েড ব্যবস্থায়।

অপেরা আরেকটি জনপ্রিয় ব্রাউজার। মূলত হালকা ব্রাউজার হিসেবে এর খ্যাতি সর্বোচ্চ।

'ডলফিন ব্রাউজার ফর অ্যান্ড্রয়েড' আরো একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা। এতে রয়েছে ওয়েবকিট ইঞ্জিন। এতে রয়েছে প্রচুরসংখ্যক জেসচার কন্ট্রোলস, ইনটুইটিভ মেনু ও ফ্লাশ সাপোর্ট। মোবাইল ফোনে ব্রাউজ করতে এতে রয়েছে বিভিন্ন প্লাগ-ইনস। এসবের মাধ্যমে ডেস্কটপের আমেজ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment

Image

Free Updates to Email
Follow Me:
facebook twitter gplus pinterest rss
https://www.facebook.com/rubel29bd